মিরাজুল ইসলাম : সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান যখন চারশ মিলিয়ন ডলারে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মহামূল্যবান পেইন্টিং ‘সালভাটর মুণ্ডি’ কিনে নিলেন তখন কেউ কিছু বলেননি। এমনকি ছবিটি ছিলো খোদ যীশু খৃষ্টের প্রতিকৃতি। এখন শোনা যাচ্ছে সৌদি আরবের আল হিলাল ক্লাব মেসির দিকে হাত বাড়িয়েছে। সাড়ে চারশো মিলিয়ন ডলার মূল্যমান ধার্য করেছে। এ নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলছেন। তা বলুক। বাস্তবতা হলো, ভিঞ্চির চেয়েও লিওনেল মেসি অনেক দামি এই মুহূর্তে।

বোঝা যাচ্ছে, ধর্মীয় লেবাস থেকে নিজেদের অবমুক্ত করতে চাচ্ছে সৌদি রাজপরিবার। সেটা কতোটুকু সম্ভব তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। মেসির দিক থেকে চিন্তা করলে বিষয়টা অবশ্যই অর্থনৈতিক। টাকার অভাবে চিকিৎসা সুবিধার জন্যই ছোট্ট বার বছরের ছেলেটি বাবার হাত ধরে একদিন রোজারিও থেকে বার্সেলোনায় পাড়ি জমিয়েছিল। সম্বল ছিলো ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা। এটা দিয়েই তার সকল অর্জন। মেসি যদি সৌদি ক্লাব আল হিলালের প্রস্তাবে মাথা হেলায়, দুনিয়ার সেরা ধনী খেলোয়াড় বনে যাবে। 

ধনী তো আগেই ছিলেন। আরো ধনী হবেন। মেসি ফাউন্ডেশন আরও শক্তপোক্ত হবে। অবসরের পর ব্যক্তিগত ব্যবসায় যেকোনো অংকের বিনিয়োগে কোনো সমস্যাই হবে না। কোচ স্কলানি তো বলেই ফেলেছেন, মেসি যে দেশে যে দলেই নাম লেখাক, আনন্দে থাকলেই হলো। এটা আমরাও বিশ্বকাপে দেখেছি, একজন সুখী মেসি মাঝ মাঠে কতটা ভয়ংকর হতে পারে। যদিও মেসির বাবা হোর্হে সৌদি আরবে মেসির যাওয়াটাকে স্রেফ গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, সৌদি আরবের পর্যটন দূত স্বয়ং মেসি।

এই চুক্তির পেছনেও নিশ্চয়ই অন্য কোনো কারণ ছিলো। আল হিলাল ক্লাবের পেছনে আছে সৌদি বিলিয়নার প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালাল। যার প্রাসাদের কক্ষ সংখ্যা ৩১৭টি এবং যার প্রমোদ তরি জেমস বন্ডের সাম্প্রতিক সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে সেই বিলিয়নার যদি মেসিকে ক্রয় করার পেছনে কলকাঠি নাড়েন, তবে হয়তো মেসিকে বিক্রি হতেই হবে। যদি না রাজনৈতিকভাবে অন্য কিছু ঘটে। যদিও মেসি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, বার্সার জন্য তার মন পোড়ে। বাকিটা টাকার খেলা।